Monday, June 8, 2015

পরিচ্ছন্ন বাসা রুচির প্রতিনিধিত্ব করে

প্রাঞ্জল সেলিম:
প্রতিটি মানুষের কাছে নিজের বাসা মানে খুব প্রিয় এবং শান্তির একটা জায়গা। আর তাই বাসা-বাড়ি সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা আবশ্যিক একটি কাজ। কিন্তু নানা কাজের ব্যস্ততায় ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অনেক সময় নজর এড়িয়ে যায়। তবে প্রতিদিন কিছুটা সময় দিলে কাজটা সহজে করা যায় এবং সংসারটাও মনের মতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে।
বলা হয়, একটি মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায় তার পোশাকের ধরনে। আবার একটি মানুষের ঘরও তার রুচিরই প্রতিনিধিত্ব করে। আর তাই আপনার থাকার ঘরটি অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে হবে। তবে একটা কথা কিন্তু ঠিক, সব ঘর সমান অপরিচ্ছন্ন হয় না। ঘরটা কোন দিকে মুখ করে বানানো হয়েছে, তার উপর নির্ভর করে বিষয়টি। সাধারণত যেসব ঘর দক্ষিণ দিকে মুখ করে বানানো হয়, সেগুলো বেশি ময়লা হয়। তবে যে কারণেই ময়লা কিংবা অপরিচ্ছন্ন হোক না কেন, যথা সময়ে পরিষ্কার করে নিলে আর কোনো সমস্যা থাকে না। ধুলোবালি আমাদের নিত্য সঙ্গী। ধুলোবালি কিছুতেই যেন পিছু ছাড়তে চায় না। আসুন ঘর পরিচ্ছন্ন রাখার কতগুলো উপায় জেনে নিই। 
 
ঘর পরিষ্কার রাখতে সবসময় ঘরের দরজা না খুলে রাখাই ভালো। বিশেষ করে আপনার ঘরটি যদি নিচতলায় হয়, বিনা কারণে দরজা খোলা রাখবেন না। কারণ যত বেশি সময় ধরে দরজা খোলা রাখবেন, ঘরে ততই বাইরের ধুলো-ময়লা এসে ঢুকবে।
 
ঘরে মোটা পর্দা ব্যবহার করা যেতে পারে ধুলোবালি প্রতিরোধ করার জন্য। শুধু দরজাতেই নয়, জানালাতেও পর্দা ব্যবহার করলে একই সাথে যেমন ঘরের সৌন্দর্য বর্ধন হবে তেমনি ধুলোবালি থেকে ঘরকে রক্ষাও করা যাবে।
 
আবার অনেক সময় দেখা যায়, স্যান্ডেল পরে ঘরে মানুষের আসা যাওয়া হলে ধুলোবালি জমে। তবে শুধু ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করলেই হবে না। প্রয়োজন নিয়মিত ঘর মোছার। আর ঘর মোছার কাপড়টি ভেজাতে হবে ডেটল কিংবা স্যাভলনযুক্ত পানিতে। এতে ঘরের মেঝে পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি জীবাণুমুক্তও হবে।
 
ঘরে যদি কার্পেট থাকে তবে সেই কার্পেট নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। কারণ কার্পেটে ময়লা জমলে হয়ে যায় আরও বেশি দৃষ্টিকটু এবং নোংরা। কার্পেট পরিষ্কারের জন্য ব্রাশ ব্যবহার করা যেতে পারে। নিয়মিত ব্রাশ দিয়ে কার্পেট পরিষ্কার করলে ধুলো-ময়লা জমার সুযোগ পাবে না।
 
আসবাবপত্রে যেসব ধুলোবালি জমে সেগুলো অনেকেই ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে থাকেন, যেটা একদমই ঠিক নয়। কারণ ভেজা কাপড় দিয়ে আসবাবপত্র পরিষ্কার করতে গেলে সেগুলোর রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এমন কিছু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে যাতে রঙের কোনো ক্ষতি না হয়। এরজন্যে মোরগের পালকের তৈরি ঝাড় ব্যবহার করা যেতে পারে।
 
শোপিস কিংবা কাচের জিনিসপত্র মোছার জন্য বাজারে বিভিন্ন প্রকার লিক্যুইড পাওয়া যায়। এগুলো দিয়ে মুছে নিলে শোপিস অনেক দিন ধরে পরিষ্কার থাকে। মাটির সামগ্রী পরিষ্কারের জন্য একটা কাজ করা যেতে পারে। ডিটারজেন্টের পানি দিয়ে সেগুলো মুছে নেওয়া যেতে পারে। এতে এসব সামগ্রীতে কোনো প্রকার রোগ জীবাণুও থাকবে না।
 
কাঠের তৈরি জিনিসপত্রও ভেজা কাপড় দিয়ে মোছা যাবে না। কারণ কাঠের তৈরি এসব জিনিসপত্রের ফাঁকফোকরে অনেক সময় জমে থাকে। তবে নামীদামি কোম্পানির কাঠের জিনিসপত্র মোছার জন্য উন্নতমানের তরল পরিষ্কারক পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
 
ঘর সাজানোর জন্য যেসব কৃত্রিম ফুল বা ফুলের গাছ রাখা হয়, সেগুলোতে জমতে পারে ধুলো-ময়লা। তাই সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন এগুলো পরিষ্কার করতে হবে। আর এসব পরিষ্কারের নিয়ম হলো, শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট পানিতে মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে এসব ফুল বা ফুলের গাছ ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।
 
যাদের বাসা রাস্তার পাশে, তাদেরকে একটু বেশিই সতর্ক থাকতে হবে। এই সতর্কতা আপনাকে পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে সাহায্য করবে। অর্থাত্ আগে থেকে সতর্ক থাকলে পরে আর কষ্ট করে পরিষ্কার করতে হবে না।
 
বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিষ্কারের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে শক না লাগে। কারণ ধুলো-ময়লা জমে থাকা কোনো কোনো অংশ পরিষ্কার করতে গিয়ে ছিদ্র হয়ে থাকা তারের উপর হাত পড়তেই পারে।

No comments:

Post a Comment