জীবনে কখনো লজ্জা ও অপমানের ভেতর দিয়ে
যান নি, এমন মানুষ পৃথিবী খুঁজলেও মিলবে না।
আমাদের সকলের জীবনেই এই
লজ্জা ও অপমানের চরম দুঃসহ মুহূর্তগুলো আসে। হতে পারে সেটা ভালোবাসায়,
দাম্পত্যে, পরিবারে কিংবা নিজের বন্ধুদের মাধ্যমে। আবার হতে পারে
কর্মক্ষেত্রে, জীবনের অন্য কোনো পর্যায়ে, এমনকি ফেসবুকের পরিচিত মহলেও। কী
করবেন, যদি কোনো কারণে চরম অপমানিত হন বা কিছু নিয়ে অসম্ভব লজ্জায় পড়ে যান?
লজ্জা ও অপমানের বোধ থেকে আত্মহত্যা করা বা নিজের জীবন নষ্ট করে ফেলাও
বিচিত্র কিছু নয়। জেনে রাখুন এমন ১০টি ধাপ, যা আবার আপনাকে মাথা উঁচু করে
বাঁচতে সাহায্য করবে।
১) প্রথমেই
জেনে রাখুন, আপনি একা নন। জীবনের যে ক্ষেত্রেই লজ্জা বা অপমানের শিকার হয়ে
থাকুন না কেন, এটা মনে রাখবেন যে আপনি প্রথম ব্যক্তি নন যিনি এই অবস্থার
মাঝ দিয়ে গিয়েছেন। উদাহরণ হিসাবে বিখ্যাত মানুষদের দিকে দেখতে পারেন, যারা
কিনা নানান অপমান ও লজ্জা কাটিয়ে আবার মাথা উঁচু করে বেঁচে আছেন। দেখতে
পারেন এমন পরিস্থিতির শিকার নিজের বন্ধুদের দিকেও। তাঁরা পারলে আপনি কেন
পারবেন না?
২) কখনোই
দমে যাবেন না, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন। একটা জিনিস মনে রাখবেন, লজা ও
অপমানে দমে গেলেন তো হেরে গেলেন। যেমন ধরুন, অফিসে কিছু নিয়ে চরম অপমানিত
হয়েছেন। এমন অবস্থায় যদি অফিসে যাওয়া ছেড়ে দেন, তাহলে সকলে এটাই ধরে নেবে
যে এমন অপমানিত হওয়ার যোগ্য। অনেকগুলো মানুষের সামনে আপনার সম্মান বলতে
কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। বরং নিজেকে জোর করে ফেরত নিয়ে যান সেখানে এবং
প্রাপ্য সম্মান আদায় করে নেয়ার জন্য কাজ করুন।
৩) যে শিক্ষা পেয়েছেন, সেটা কিছুতেই ভুলে যাবেন না। শত্রু-মিত্র যাদেরকে চিনে নিয়েছেন, সে চেহারাগুলোও ভুলে যাবেন না একেবারেই।
৪) সবকিছুকে
খুব বেশি ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। এটা জানবেন যে পৃথিবীতে সবাই সবকিছু
পারে না, পৃথিবীতে সবকিছু সবার জন্য নয়। অফিসে ব্যর্থ হয়েছেন বলে লজ্জিত?
জানবেন যে সেই কাজটি আপনার জন্য নয় কিংবা আরো কয়েকবার চেষ্টা করলে আপনি
নিশ্চয়ই কাজটি পারবেন। সম্পর্কে প্রতারিত হয়েছেন বলে অপমানিত লাগছে? এটা
জানবেন যে ওই মানুষটির সঙ্গে আপনাকে মানায় না, আপনি আরো ভালো কিছুর জন্য
তৈরি।
৫) যদি
এমন কাউকে খুঁজে পান, যিনি একই পরিস্থিতির মাঝ দিয়ে গিয়েছেন, তাহলে অবশ্যই
তাদের সঙ্গে অন্তরঙ্গতা বাড়ান। তারা কীভাবে বিষয়টির মোকাবিলা করেছেন, সেই
ব্যাপারটি আপনাকেও খুব সাহায্য করবে। এমন কাউকে না পেলে পেশাদার
কাউন্সিলারের সাহায্য নিতে পারেন।
৬) নিজের
পছন্দের সকল কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। শখগুলোকে মূল্য দিন। পছন্দের
মানুষদের সঙ্গে মেলামেশা করুন যারা আপনাকে এই প্রসঙ্গে কিছু মনে করাবে না।
৭) প্রতিশোধ
নিতে যাওয়ার আগে দুবার ভাবুন। এই প্রতিশোধ আপনাকে কিছু দেবেন না, বরং
রাগের মাথায় আপনি এমন কিছু করে বসবেন যাতে হয়তো আপনার ঝামেলা আরো বাড়বে।
বরং এই সময়টা নিজের কাজের দিকে মন দিন। প্রতিশোধ যদি একান্তই নিতে হয়, তবে
সঠিক সময়ের অপেক্ষা করুন। পুরো জীবন পড়ে আছে।
৮) কাজ
থেকে বিশ্রাম নেবেন মানে লুকিয়ে থাকবেন না। সবার চোখের আড়ালে একা একা
অশ্রু বিসর্জন আপনার কোনই উপকার করবে না। জোর করে নিজেকে সাহস যোগান আবার
সমাজের সামনে যাওয়ার জন্য।
৯) ভবিষ্যতের
পরিকল্পনা করা কখনো বন্ধ করবেন না। কী করা যেতে পারে, কী করলে ভালো হবে,
কীভাবে আরো সফল ও সুখী হতে পারেন সেই পরিকল্পনা করুন। মনের মাঝে নতুন
উদ্দীপনা খুঁজে পাবেন।
১০) এমন
মানুষদের সঙ্গে বেশি মেলামেশা করুন যাদের চোখে আপনি সেরা এবং যারা আপনার
অনেক প্রশংসা করে। প্রয়োজনে নতুন বন্ধু বানান যারা এই লজ্জা ও অপমান বিষয়ে
কিছুই জানেন না। প্রশংসা ও উষ্ণ সম্পর্কে আপনাকে তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলিয়ে
দেবে।
No comments:
Post a Comment