ফুসফুসে জীবাণুর সংক্রমণে মূলত শিশুদের নিউমোনিয়া হয়। এটি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস ইত্যাদি বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণে হলেও এ রোগের অন্যতম কারণ ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস। বাংলাদেশে প্রতিবছর নিউমোনিয়ার কারণে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার ২২%।
তবে একটু সচেতন হলে নিউমোনিয়া জনিত মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি কেন?
অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্ম, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সময়মত টিকা গ্রহণ না করা এবং অন্য কোন শারীরিক অসুস্থতা যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যেমন কিডনি বা হার্টের অসুখ ইত্যাদি।
কিভাবে ছড়ায়?
নিউমোনিয়ার জীবাণু প্রধানত রোগাক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রীর মাধ্যমে (তোয়ালা, খেলনা ইত্যাদি) জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষের নাক, সাইনাস ও মুখে থাকতে পারে যা শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ছড়িয়ে এ রোগ ঘটাতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবাণু রক্তের দ্বারাও ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গ:
জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নিউমোনিয়ার লক্ষণ। আর শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে ঢুকে যাওয়া মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া অস্থিরতা, অরুচি, বমি, বুকে বা পেটে ব্যথা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদিও থাকতে পারে। মারাত্মক পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে বা শিশু অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা:
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে শিশুর পরিস্থিতির উপর। চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে বুকের এক্সরে এবং রক্তের সি বি সি পরীক্ষা করতে পারেন অথবা অন্যান্য জটিলতার জন্য আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যে শিশু মুখে খেতে পারে এবং যার শ্বাসকষ্টের মাত্রা তীব্র নয় তাকে বাড়িতে রেখে মুখে খাওয়া ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং অক্সিজেন ও শিরাপথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে শিশুর খাদ্য এবং পানীয় সম্পর্কে যত্নবান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিরোধ:
কোন অসুখ বিস্তার লাভ করার আগে তাকে প্রতিরোধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে-
- অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্মের হার কমাতে হবে, কেননা এ সব শিশু খুব সহজেই রোগাক্রান্ত হয়– এ জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।
- শিশুর অপুষ্টি দূর করতে হবে, কারণ যে সব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খেতে দিতে হবে। পূর্ণ ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে এবং পূর্ণ ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
- শিশুকে যথাসময়ে ই পি আই কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে প্রদত্ত টিকা দিতে হবে।
- বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- সিগারেটের বা চুলার ধোঁয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
- ঠাণ্ডা–কাশি বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি হতে শিশুকে আলাদা রাখতে হবে।
- জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে বাড়ির সকলকে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
ডা. ইউ কে এম নাজমুন আরা
এম বি বি এস; এফ সি পি এস (শিশু);
ডা.
ইউ কে এম নাজমুন আরা : ফুসফুসে জীবাণুর সংক্রমণে মূলত শিশুদের নিউমোনিয়া
হয়। এটি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস ইত্যাদি বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণে
হলেও এ রোগের অন্যতম কারণ ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস। বাংলাদেশে প্রতিবছর
নিউমোনিয়ার কারণে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার ২২%। তবে একটু সচেতন
হলে নিউমোনিয়া জনিত মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি কেন
অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্ম, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সময়মত টিকা গ্রহণ না করা এবং অন্য কোন শারীরিক অসুস্থতা যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যেমন কিডনি বা হার্টের অসুখ ইত্যাদি।
কিভাবে ছড়ায়
নিউমোনিয়ার জীবাণু প্রধানত রোগাক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রীর মাধ্যমে (তোয়ালা, খেলনা ইত্যাদি) জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষের নাক, সাইনাস ও মুখে থাকতে পারে যা শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ছড়িয়ে এ রোগ ঘটাতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবাণু রক্তের দ্বারাও ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গ
জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নিউমোনিয়ার লক্ষণ। আর শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে ঢুকে যাওয়া মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া অস্থিরতা, অরুচি, বমি, বুকে বা পেটে ব্যথা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদিও থাকতে পারে। মারাত্মক পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে বা শিশু অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে শিশুর পরিস্থিতির উপর। চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে বুকের এক্সরে এবং রক্তের সি বি সি পরীক্ষা করতে পারেন অথবা অন্যান্য জটিলতার জন্য আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যে শিশু মুখে খেতে পারে এবং যার শ্বাসকষ্টের মাত্রা তীব্র নয় তাকে বাড়িতে রেখে মুখে খাওয়া ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং অক্সিজেন ও শিরাপথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে শিশুর খাদ্য এবং পানীয় সম্পর্কে যত্নবান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিরোধ
কোন অসুখ বিস্তার লাভ করার আগে তাকে প্রতিরোধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে-
- অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্মের হার কমাতে হবে, কেননা এ সব শিশু খুব সহজেই রোগাক্রান্ত হয়– এ জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।
- শিশুর অপুষ্টি দূর করতে হবে, কারণ যে সব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খেতে দিতে হবে। পূর্ণ ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে এবং পূর্ণ ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
- শিশুকে যথাসময়ে ই পি আই কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে প্রদত্ত টিকা দিতে হবে।
- বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- সিগারেটের বা চুলার ধোঁয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
- ঠাণ্ডা–কাশি বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি হতে শিশুকে আলাদা রাখতে হবে।
- জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে বাড়ির সকলকে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
লেখক : ডা. ইউ কে এম নাজমুন আরা
এম বি বি এস; এফ সি পি এস (শিশু);
শিশু বিশেষজ্ঞ
আবাসিক চিকিৎসক (শিশু); ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
- See more at: http://health.thereport24.com/article/210/index.html#sthash.tkpUj3Wu.dpuf
নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি কেন
অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্ম, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সময়মত টিকা গ্রহণ না করা এবং অন্য কোন শারীরিক অসুস্থতা যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যেমন কিডনি বা হার্টের অসুখ ইত্যাদি।
কিভাবে ছড়ায়
নিউমোনিয়ার জীবাণু প্রধানত রোগাক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রীর মাধ্যমে (তোয়ালা, খেলনা ইত্যাদি) জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষের নাক, সাইনাস ও মুখে থাকতে পারে যা শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ছড়িয়ে এ রোগ ঘটাতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবাণু রক্তের দ্বারাও ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গ
জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নিউমোনিয়ার লক্ষণ। আর শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে ঢুকে যাওয়া মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া অস্থিরতা, অরুচি, বমি, বুকে বা পেটে ব্যথা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদিও থাকতে পারে। মারাত্মক পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে বা শিশু অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে শিশুর পরিস্থিতির উপর। চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে বুকের এক্সরে এবং রক্তের সি বি সি পরীক্ষা করতে পারেন অথবা অন্যান্য জটিলতার জন্য আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যে শিশু মুখে খেতে পারে এবং যার শ্বাসকষ্টের মাত্রা তীব্র নয় তাকে বাড়িতে রেখে মুখে খাওয়া ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং অক্সিজেন ও শিরাপথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে শিশুর খাদ্য এবং পানীয় সম্পর্কে যত্নবান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিরোধ
কোন অসুখ বিস্তার লাভ করার আগে তাকে প্রতিরোধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে-
- অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্মের হার কমাতে হবে, কেননা এ সব শিশু খুব সহজেই রোগাক্রান্ত হয়– এ জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।
- শিশুর অপুষ্টি দূর করতে হবে, কারণ যে সব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খেতে দিতে হবে। পূর্ণ ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে এবং পূর্ণ ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
- শিশুকে যথাসময়ে ই পি আই কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে প্রদত্ত টিকা দিতে হবে।
- বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- সিগারেটের বা চুলার ধোঁয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
- ঠাণ্ডা–কাশি বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি হতে শিশুকে আলাদা রাখতে হবে।
- জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে বাড়ির সকলকে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
লেখক : ডা. ইউ কে এম নাজমুন আরা
এম বি বি এস; এফ সি পি এস (শিশু);
শিশু বিশেষজ্ঞ
আবাসিক চিকিৎসক (শিশু); ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
- See more at: http://health.thereport24.com/article/210/index.html#sthash.tkpUj3Wu.dpuf
ডা.
ইউ কে এম নাজমুন আরা : ফুসফুসে জীবাণুর সংক্রমণে মূলত শিশুদের নিউমোনিয়া
হয়। এটি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস ইত্যাদি বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণে
হলেও এ রোগের অন্যতম কারণ ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস। বাংলাদেশে প্রতিবছর
নিউমোনিয়ার কারণে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার ২২%। তবে একটু সচেতন
হলে নিউমোনিয়া জনিত মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি কেন
অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্ম, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সময়মত টিকা গ্রহণ না করা এবং অন্য কোন শারীরিক অসুস্থতা যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যেমন কিডনি বা হার্টের অসুখ ইত্যাদি।
কিভাবে ছড়ায়
নিউমোনিয়ার জীবাণু প্রধানত রোগাক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রীর মাধ্যমে (তোয়ালা, খেলনা ইত্যাদি) জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষের নাক, সাইনাস ও মুখে থাকতে পারে যা শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ছড়িয়ে এ রোগ ঘটাতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবাণু রক্তের দ্বারাও ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গ
জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নিউমোনিয়ার লক্ষণ। আর শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে ঢুকে যাওয়া মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া অস্থিরতা, অরুচি, বমি, বুকে বা পেটে ব্যথা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদিও থাকতে পারে। মারাত্মক পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে বা শিশু অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে শিশুর পরিস্থিতির উপর। চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে বুকের এক্সরে এবং রক্তের সি বি সি পরীক্ষা করতে পারেন অথবা অন্যান্য জটিলতার জন্য আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যে শিশু মুখে খেতে পারে এবং যার শ্বাসকষ্টের মাত্রা তীব্র নয় তাকে বাড়িতে রেখে মুখে খাওয়া ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং অক্সিজেন ও শিরাপথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে শিশুর খাদ্য এবং পানীয় সম্পর্কে যত্নবান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিরোধ
কোন অসুখ বিস্তার লাভ করার আগে তাকে প্রতিরোধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে-
- অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্মের হার কমাতে হবে, কেননা এ সব শিশু খুব সহজেই রোগাক্রান্ত হয়– এ জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।
- শিশুর অপুষ্টি দূর করতে হবে, কারণ যে সব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খেতে দিতে হবে। পূর্ণ ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে এবং পূর্ণ ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
- শিশুকে যথাসময়ে ই পি আই কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে প্রদত্ত টিকা দিতে হবে।
- বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- সিগারেটের বা চুলার ধোঁয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
- ঠাণ্ডা–কাশি বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি হতে শিশুকে আলাদা রাখতে হবে।
- জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে বাড়ির সকলকে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
লেখক : ডা. ইউ কে এম নাজমুন আরা
এম বি বি এস; এফ সি পি এস (শিশু);
শিশু বিশেষজ্ঞ
আবাসিক চিকিৎসক (শিশু); ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
- See more at: http://health.thereport24.com/article/210/index.html#sthash.tkpUj3Wu.dpuf
নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি কেন
অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্ম, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সময়মত টিকা গ্রহণ না করা এবং অন্য কোন শারীরিক অসুস্থতা যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যেমন কিডনি বা হার্টের অসুখ ইত্যাদি।
কিভাবে ছড়ায়
নিউমোনিয়ার জীবাণু প্রধানত রোগাক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রীর মাধ্যমে (তোয়ালা, খেলনা ইত্যাদি) জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষের নাক, সাইনাস ও মুখে থাকতে পারে যা শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ছড়িয়ে এ রোগ ঘটাতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবাণু রক্তের দ্বারাও ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গ
জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নিউমোনিয়ার লক্ষণ। আর শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে ঢুকে যাওয়া মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া অস্থিরতা, অরুচি, বমি, বুকে বা পেটে ব্যথা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদিও থাকতে পারে। মারাত্মক পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে বা শিশু অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে শিশুর পরিস্থিতির উপর। চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে বুকের এক্সরে এবং রক্তের সি বি সি পরীক্ষা করতে পারেন অথবা অন্যান্য জটিলতার জন্য আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যে শিশু মুখে খেতে পারে এবং যার শ্বাসকষ্টের মাত্রা তীব্র নয় তাকে বাড়িতে রেখে মুখে খাওয়া ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং অক্সিজেন ও শিরাপথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে শিশুর খাদ্য এবং পানীয় সম্পর্কে যত্নবান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিরোধ
কোন অসুখ বিস্তার লাভ করার আগে তাকে প্রতিরোধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে-
- অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্মের হার কমাতে হবে, কেননা এ সব শিশু খুব সহজেই রোগাক্রান্ত হয়– এ জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।
- শিশুর অপুষ্টি দূর করতে হবে, কারণ যে সব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খেতে দিতে হবে। পূর্ণ ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে এবং পূর্ণ ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
- শিশুকে যথাসময়ে ই পি আই কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে প্রদত্ত টিকা দিতে হবে।
- বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- সিগারেটের বা চুলার ধোঁয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
- ঠাণ্ডা–কাশি বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি হতে শিশুকে আলাদা রাখতে হবে।
- জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে বাড়ির সকলকে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
লেখক : ডা. ইউ কে এম নাজমুন আরা
এম বি বি এস; এফ সি পি এস (শিশু);
শিশু বিশেষজ্ঞ
আবাসিক চিকিৎসক (শিশু); ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
- See more at: http://health.thereport24.com/article/210/index.html#sthash.tkpUj3Wu.dpuf
ডা.
ইউ কে এম নাজমুন আরা : ফুসফুসে জীবাণুর সংক্রমণে মূলত শিশুদের নিউমোনিয়া
হয়। এটি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস ইত্যাদি বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণে
হলেও এ রোগের অন্যতম কারণ ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস। বাংলাদেশে প্রতিবছর
নিউমোনিয়ার কারণে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার ২২%। তবে একটু সচেতন
হলে নিউমোনিয়া জনিত মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি কেন
অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্ম, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সময়মত টিকা গ্রহণ না করা এবং অন্য কোন শারীরিক অসুস্থতা যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যেমন কিডনি বা হার্টের অসুখ ইত্যাদি।
কিভাবে ছড়ায়
নিউমোনিয়ার জীবাণু প্রধানত রোগাক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রীর মাধ্যমে (তোয়ালা, খেলনা ইত্যাদি) জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষের নাক, সাইনাস ও মুখে থাকতে পারে যা শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ছড়িয়ে এ রোগ ঘটাতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবাণু রক্তের দ্বারাও ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গ
জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নিউমোনিয়ার লক্ষণ। আর শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে ঢুকে যাওয়া মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া অস্থিরতা, অরুচি, বমি, বুকে বা পেটে ব্যথা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদিও থাকতে পারে। মারাত্মক পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে বা শিশু অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে শিশুর পরিস্থিতির উপর। চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে বুকের এক্সরে এবং রক্তের সি বি সি পরীক্ষা করতে পারেন অথবা অন্যান্য জটিলতার জন্য আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যে শিশু মুখে খেতে পারে এবং যার শ্বাসকষ্টের মাত্রা তীব্র নয় তাকে বাড়িতে রেখে মুখে খাওয়া ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং অক্সিজেন ও শিরাপথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে শিশুর খাদ্য এবং পানীয় সম্পর্কে যত্নবান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিরোধ
কোন অসুখ বিস্তার লাভ করার আগে তাকে প্রতিরোধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে-
- অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্মের হার কমাতে হবে, কেননা এ সব শিশু খুব সহজেই রোগাক্রান্ত হয়– এ জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।
- শিশুর অপুষ্টি দূর করতে হবে, কারণ যে সব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খেতে দিতে হবে। পূর্ণ ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে এবং পূর্ণ ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
- শিশুকে যথাসময়ে ই পি আই কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে প্রদত্ত টিকা দিতে হবে।
- বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- সিগারেটের বা চুলার ধোঁয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
- ঠাণ্ডা–কাশি বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি হতে শিশুকে আলাদা রাখতে হবে।
- জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে বাড়ির সকলকে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
লেখক : ডা. ইউ কে এম নাজমুন আরা
এম বি বি এস; এফ সি পি এস (শিশু);
শিশু বিশেষজ্ঞ
আবাসিক চিকিৎসক (শিশু); ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
- See more at: http://health.thereport24.com/article/210/index.html#sthash.tkpUj3Wu.dpuf
নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি কেন
অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্ম, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সময়মত টিকা গ্রহণ না করা এবং অন্য কোন শারীরিক অসুস্থতা যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যেমন কিডনি বা হার্টের অসুখ ইত্যাদি।
কিভাবে ছড়ায়
নিউমোনিয়ার জীবাণু প্রধানত রোগাক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রীর মাধ্যমে (তোয়ালা, খেলনা ইত্যাদি) জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষের নাক, সাইনাস ও মুখে থাকতে পারে যা শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ছড়িয়ে এ রোগ ঘটাতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবাণু রক্তের দ্বারাও ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গ
জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নিউমোনিয়ার লক্ষণ। আর শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে ঢুকে যাওয়া মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া অস্থিরতা, অরুচি, বমি, বুকে বা পেটে ব্যথা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদিও থাকতে পারে। মারাত্মক পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে বা শিশু অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে শিশুর পরিস্থিতির উপর। চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে বুকের এক্সরে এবং রক্তের সি বি সি পরীক্ষা করতে পারেন অথবা অন্যান্য জটিলতার জন্য আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যে শিশু মুখে খেতে পারে এবং যার শ্বাসকষ্টের মাত্রা তীব্র নয় তাকে বাড়িতে রেখে মুখে খাওয়া ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু মারাত্মক নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং অক্সিজেন ও শিরাপথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে শিশুর খাদ্য এবং পানীয় সম্পর্কে যত্নবান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিরোধ
কোন অসুখ বিস্তার লাভ করার আগে তাকে প্রতিরোধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে-
- অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর জন্মের হার কমাতে হবে, কেননা এ সব শিশু খুব সহজেই রোগাক্রান্ত হয়– এ জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। অপরিণত ও স্বল্প ওজনের শিশুর অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।
- শিশুর অপুষ্টি দূর করতে হবে, কারণ যে সব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণের জন্য জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খেতে দিতে হবে। পূর্ণ ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে এবং পূর্ণ ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
- শিশুকে যথাসময়ে ই পি আই কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে প্রদত্ত টিকা দিতে হবে।
- বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- সিগারেটের বা চুলার ধোঁয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
- ঠাণ্ডা–কাশি বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি হতে শিশুকে আলাদা রাখতে হবে।
- জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে বাড়ির সকলকে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
লেখক : ডা. ইউ কে এম নাজমুন আরা
এম বি বি এস; এফ সি পি এস (শিশু);
শিশু বিশেষজ্ঞ
আবাসিক চিকিৎসক (শিশু); ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
- See more at: http://health.thereport24.com/article/210/index.html#sthash.tkpUj3Wu.dpuf
No comments:
Post a Comment