ডা. শাহজাদা সেলিম
স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে শরীরের অগ্ন্যাশয়ের নষ্ট হওয়া বিটা কোষ আবার ফিরিয়ে আনা যাবে। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগীকে কৃত্রিম ইনসুলিন নেওয়ার আর প্রয়োজন নেই বা কম প্রয়োজন হবে।
অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ ইনসুলিন নিঃসরণ করে। ইনসুলিন রক্তে থাকা শর্করা দেহ কোষে প্রবেশে সহায়তা করে। এই শর্করা পরে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। বিভিন্ন কারণে অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ বিকল বা নষ্ট হওয়ার কারণে ইনসুলিন নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে তা দেহ কোষে পৌঁছায় না। এটাই ডায়াবেটিস পরিস্থিতি। অর্থাৎ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কিন্তু ডায়াবেটিস কখনো পুরোপুরি ভালো হয় না।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ডায়াবেটিস ক্রমাবনতিশীল রোগ। বিটা কোষ আস্তে আস্তে নষ্ট হয় বা মারা যায়। ট্যাবলেট ও কৃত্রিম ইনসুলিন দিয়ে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা হয়ে আসছে। ট্যাবলেট বেঁচে থাকা বিটা কোষকে সহায়তা করত আরও বেশী ইনসুলিন নিঃসরণে। আর ইনজেকশনের মাধ্যমে নেওয়া কৃত্রিম ইনসুলিন সরাসরি রক্তে মিশে শর্করা নিয়ে যায় দেহ কোষে।
১৯২১ সালে প্রথম কৃত্রিম ইনসুলিন আবিষ্কৃত হয়। এর পর কলমের মাধ্যমে ইনসুলিনের ব্যবহারকে মানুষ সাদরে গ্রহণ করেছে। এই ইনসুলিন প্রতিবার খাবারের আধা ঘণ্টা আগে নেওয়া হয়। কিন্তু এখন বাজারে ‘লং লাস্টিং’ ইনসুলিন আছে। এই ইনসুলিন ৪০ ঘণ্টায় একবার ব্যবহার করতে হয়। বাংলাদেশের বাজারেও এই লং লাস্টিং ইনসুলিন পাওয়া যাচ্ছে।
একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ডায়াবেটিসের নতুন ওষুধ ও চিকিৎসা প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বহু বছর ধরে অর্থ বিনিয়োগ করে আসছে। এরকম একটি প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রে দেখা যায়, আগামী ৫-৭ বছরের মধ্যে মুখে খাওয়ার ইনসুলিন বাজারে আসবে। ইতোমধ্যে ইনসুলিন ট্যাবলেটের প্রথম ধাপের পরীক্ষা (ট্রায়াল) শেষ হয়েছে।
কাগজপত্রে দেখা যায়, সুইডেনের লান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেম সেল সেন্টারে বিটা কোষ প্রতিস্থাপন নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, খুব শিগগির মানুষ এই গবেষণার সুফল পাবে।
ডা. শাহজাদা সেলিম
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
No comments:
Post a Comment